চাল-ডাল, চিনি, তেলসহ নিত্যপণ্যের দামে যখন মানুষের নাভিশ্বাস ওঠার দশা, তারই মধ্যে আটা ও ময়দার দাম বাড়লো আরেক দফা। দুই সপ্তাহের ব্যবধানে খোলা আটা ৫ থেকে ৭ টাকা এবং প্যাকেটজাত আটা ৮ থেকে ১২ টাকা বাড়তিতে বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া খোলা ময়দা ২ থেকে ৫ টাকা এবং প্যাকেটের দাম ৬ থেকে ৮ টাকা বেড়েছে।
আজ শুক্রবার (২৬ আগস্ট) রাজধানীর কারওয়ান বাজার, রামপুরা, মহাখালী, নাখালপাড়া, তেজগাঁও, হাতিরপুলসহ বেশ কিছু এলাকার বাজারে খোঁজ নিয়ে দেখা গেছে, খোলা আটা প্রতি কেজি ৫২ থেকে ৫৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। আর প্যাকেটজাত আটা বিক্রি হচ্ছে ৬২ থেকে ৬৩ টাকায়। গত সপ্তাহেও খোলা আটা ৪৫ থেকে ৫০ টাকা এবং প্যাকেট ৫০ থেকে ৫৫ টাকা কেজি বিক্রি হয়েছে।
এদিকে খোলা ময়দা প্রতি কেজি ৬০ থেকে ৬৫ টাকায় বিক্রি হলেও প্যাকেট ময়দার কেজি ৭৩ থেকে ৭৪ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এক সপ্তাহ আগেও খোলা ময়দা ৫৮ থেকে ৬০ টাকা এবং প্যাকেট ময়দা ৬৫ থেকে ৬৮ টাকায় বিক্রি হয়েছে।
সরকারি সংস্থা টিসিবির দৈনিক বাজার দর তালিকায় দেখা গেছে, বর্তমানে খোলা আটা ৫০ থেকে ৫৫ টাকা এবং প্যাকেটজাত আটা ৫৫ থেকে ৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। খোলা ময়দার কেজি ৬০ থেকে ৬২ টাকা এবং প্যাকেটজাত ময়দা ৬৫ থেকে ৭০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
সংস্থাটির তালিকা অনুযায়ী, এক মাসের ব্যবধানে খোলা আটার দাম ২৩ শতাংশ ও প্যাকেটজাত আটার দাম ১৭ শতাংশ বেড়েছে। আর খোলা ময়দার দাম ৮ শতাংশ ও প্যাকেটে ২ শতাংশের বেশি বেড়েছে। তবে এক বছরের ব্যবধানে খাদ্যপণ্য দুটির দাম বাড়ার হার অনেক বেশি। এক বছরে আটার দাম ৬৬.৬৭ শতাংশ ও ময়দার দাম ৫৩.৪১ শতাংশ বেড়েছে।
গম আমদানি ও বাজারজাতকারী প্রতিষ্ঠানগুলো বলছে, ডলারের মূল্য বৃদ্ধির কারণে একবার আটা-ময়দার দাম বেড়েছে। এখন জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধির কারণে পরিবহন ভাড়া থেকে সবকিছুর খরচ বেড়েছে। তাই আটা-ময়দায়ও দাম সমন্বয় করা হয়েছে।
এ ব্যাপারে বসুন্ধরা মাল্টি ফুড প্রডাক্টসের বিক্রয় বিভাগের নির্বাহী পরিচালক রেদওয়ানুর রহমান বলেন, আন্তর্জাতিক বাজারে দাম কমলেও ডলার ও জ্বালানি তেলের দাম বাড়ার কারণে আমাদের আটা-ময়দার দাম সমন্বয় না করে উপায় ছিল না।
ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে সম্প্রতি বিশ্ববাজারে গমের অস্থিরতা দেখা দিয়েছে। এতে গত এপ্রিল থেকে বাংলাদেশেরও গম আমদানি প্রায় বন্ধ হয়ে যায়। এরপর ভারত রপ্তানি বন্ধ করলে দেশের আটা-ময়দার বাজার আরও বেসামাল হয়ে ওঠে।
বর্তমানে যুদ্ধ চললেও সমঝোতার মাধ্যমে ইউক্রেন ও রাশিয়ার আমদানি শুরু হওয়ায় বিশ্ববাজারে কমতে শুরু করেছে গমের দাম। বিশ্ববাজারে কমলেও তার কোনো সুফল মেলে না বাংলাদেশে। উল্টো দিন দিন বাড়িয়েই নেওয়া হচ্ছে আটা ও ময়দার দাম।