দেশে একদিকে ইলিশের অনেকটা আকাল, অন্যদিকে দামও অনেক চড়া। অথচ ভারতে রপ্তানি করা হচ্ছে ইলিশ মাছ, তাও দেশের তুলনায় স্বল্পমূল্যে। এমন পরিস্থিতিতে ভারতে ইলিশ রপ্তানি বন্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার অনুরোধ জানিয়ে পাঠানো হয়েছে লিগ্যাল নোটিশ।
আজ রোববার (১১ সেপ্টেম্বর) সরকারের চার মন্ত্রণালয়ের সচিব এবং তিনটি সংস্থার চেয়ারম্যান বরাবর ওই নোটিশ পাঠিয়েছেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মো. মাহমুদুল হাসান। রেজিস্ট্রি ডাকযোগে পাঠানো নোটিশে সাতদিনের মধ্যে স্থায়ীভাবে ভারতে ইলিশ রপ্তানি বন্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার অনুরোধ জানানো হয়েছে।
আইনজীবী মো. মাহমুদুল হাসান জানান, আইনি নোটিশ পাঠানো হয়েছে বাণিজ্যসচিব, পররাষ্ট্রসচিব, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ সচিব, বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটনসচিব এবং জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের চেয়ারম্যান, আমদানি ও রপ্তানি প্রধান নিয়ন্ত্রকের দপ্তরের প্রধান নিয়ন্ত্রক ও পর্যটন করপোরেশনের চেয়ারম্যান বরাবর।
তিনি বলেন, আমাদের জাতীয় মাছ ইলিশ। কিন্তু অতিরিক্ত দামের কারণে দেশের দরিদ্র মানুষ তো দুরের কথা মধ্যবিত্ত শ্রেণিও ইলিশ কিনতে পারছেন না। দেশের মানুষের চাহিদা সত্ত্বেও ইলিশ রপ্তানি করা হচ্ছে ভারতে। রপ্তানির কারণে দেশের বাজারে ইলিশের দাম আরও বেড়ে গেছে।
আইনজীবী মাহমুদুল হাসান আরও বলেন, তাছাড়া দেশের বাজারে ইলিশের যে দাম, ভারতে রপ্তানিমূল্য তার চেয়ে তুলনামূলক কম। তাই স্থায়ীভাবে ইলিশ রপ্তানি বন্ধে ব্যবস্থা নিতে আইনি নোটিশ পাঠানো হয়েছে বাণিজ্যমন্ত্রণালয়সহ চার মন্ত্রণালয় ও তিন দপ্তরকে।
নোটিশদাতা এই আইনজীবী জানান, আগামী সাত দিনের মধ্যে এ বিষয়ে ব্যবস্থা না দেওয়া হলে উচ্চ আদালতে রিট করবেন তিনি।
প্রসঙ্গত, গত ৪ সেপ্টেম্বর রোববার বাণিজ্যমন্ত্রণালয় ভারতে ইলিশ রপ্তানির অনুমোদন দেয়। দেশের ৪৯টি ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠানকে ২৪৫০ মেট্রিক টন ইলিশ ভারতে রপ্তানির অনুমোদন দিয়েছে বাণিজ্যমন্ত্রণালয়। প্রতিষ্ঠানগুলোকে ৩০ সেপ্টেম্বরের মধ্যে সব ইলিশ রপ্তানি করতে বলা হয়। অনুমোদন অনুযায়ী, প্রতিটি প্রতিষ্ঠান ৫০ মেট্রিক টন করে ইলিশ ভারতে রপ্তানি করবে।
ঠিক পরদিনই সোমবার সন্ধ্যায় যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দর দিয়ে প্রথম চালানেই আট হাজার কেজি ইলিশ রপ্তানি করে একটি মাছ রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠান। জানা যায়, প্রতিটি ইলিশ এক কেজি সাইজের এবং তা মাত্র ১০ মার্কিন ডলার (৯৪৯ টাকা) দরে রপ্তানি করা হয়েছে। এ নিয়ে ক্ষোভ বিরাজ করছে দেশের সাধারণ মানুষের মধ্যে।